সিভিল টেকনোলজি

সরকারী-বেসরকারী সকল বিভাগেই পুরকৌশল সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ । সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হলো একটি প্রাচীনতম প্রধান নিয়মানুবর্তি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথা । ১৭৪৭ সালে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় ফ্রান্সে, যার নাম ”দি ন্যাশনাল স্কুল অব ব্রিজেস এন্ড হাইওয়েজ” । তখন একজন প্রকৃত ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যাকে ডাকা হতো, তার নাম “ জন স্মিটন” । এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে শহরে সব ধরনের কাঠামো নির্মান, পরিকল্পিত জল সরবরাহ ও নর্দমা সিস্টেম, পরিকল্পিত রেলপথ ও মহাসড়ক তৈরির পরিকল্পনা করতে হতো । বিশ্বের প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং সমাজের মঙ্গল কামনায় ১৮২৮ সালে, ইংল্যান্ডে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন শুরু হয়। মানব সভ্যতার শুরু থেকে প্রকৌশল জীবন ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০ এবং ২০০০ সালে প্রচীন মিশরীয় সভ্যতা ওমেসোপটেমিয়ার সভ্যতা (প্রচীন ইরাক) থেকে পুরকৌশলের যাত্রা শুরু বলে ধারনা করা হয়, ঠিক যখন থেকে মানুষ তাদের বসবাসের জন্য আবাস নির্মানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এইখানে প্রধানত যেই বিষয় পড়ানো হয় তা হল বলবিদ্যা (mechanics), এছাড়া ড্রয়িং, নকশা (designing) এর উপরও ভাল দখল থাকা চাই। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান শাখা চারটি- I. Structural Engineering, II. Transportation Engineering, III. Geo technical Engineering, IV. Environmental Engineering এছাড়া Water Resource Engineering কেও পুরকৌশলের একটা শাখা বলা যায় । সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ব বাড়ছে । বাংলাদেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ আছে ।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

  • পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো প্রকৌশলবিদ্যা হচ্ছে পুরকৌশল বিভাগ বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। আমরা যে বসবাসের জন্য এবং নিজস্ব কাজের জন্য উঁচু উঁচু দালান নির্মাণ করি এবং চলাচলের জন্য ব্রিজ ব্যবহার করি সেগুলো তৈরি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ মূলত Structural Engineer এসব কাজের জন্য নিয়োজিত থাকে।
  • যে রাস্তা দিয়ে আমরা যাতায়াত করি সেই রাস্তা নির্মাণ, রাস্তার উপর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চলাচলের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে তাদের গতিবিদ্যা নিয়ে কাজ করা হয় এই প্রকৌশল বিভাগেTransportation Engineering এর মধ্যে পড়ে।
  • মাটি বা সয়েল নিয়ে কাজ করা হয় এই বিভাগে। উঁচু উঁচু যে দালান নির্মাণ করা হয় সেগুলোর ভিত্তি থাকে মাটির নিচে। এই ভিত্তি হতে হয় মজবুত এবং ভারবাহী। এই ভিত্তি এমনভাবে তৈরি করতে হয় যেন ভূমিকম্প হলেও দালান মাটিতে বসে না যায় বা হেলে না পড়ে। এ বিষয় পড়ানো হয় Geotechinal Engineeringএর ভিতর।
  • পরিবেশ প্রকৌশল (Environmental Engineering) নিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়। এই বিষয়টিতে যেকোনো পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে গবেষণা করা হয়। ঘরে ঘরে মানুষ যেন বিশুদ্ধ পানি পেতে পারে সেজন্য যে যে বিষয় পড়ানো উচিত তার সব কিছু পরিবেশবিদ্যার মধ্যে পড়ে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যার নাম পানি সম্পদ প্রকৌশল বা Water Resource Engineering। বাঁধ তৈরি, বন্যা এবং খরা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন ঋতুতে ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি বণ্টন ইত্যাদি বিষয়বস্তু পড়ানো হয় এই বিভাগে।
  • অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় হচ্ছে এর নির্মাণ খরচ। একবিংশ শতাব্দীর প্রকৌশলীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে অবকাঠামোর বাইরের সৌন্দর্য বজায় রেখে জটিল জটিল ডিজাইন কম খরচে করা যায় সেটার উপায় বের করা। শুধু খরচ কম রাখলেই হবে না, কম খরচে ভালো কাঁচামাল ব্যবহার করে অনেক বেশি স্থায়িত্ব নিয়ে এই কাঠামো তৈরি করতে হবে। এই খরচের ভিতর কিন্তু আবার কাঠামো নির্মাণ করার পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কার- এই দুটোর জন্য যে খরচ হবে সেটাও ধরতে হবে।

কর্মক্ষেত্র

  • সড়ক ও জনপদ বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ
  • Real estate company, নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
  • পরিবেশ নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন multinational company, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও বিভিন্ন multinational NGO
  • জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
  • রেলওয়ে, এল.জি.ই.ডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ওয়াসা, পিডিবি, ওয়াপদা

শিক্ষকবৃন্দ

শেখ বুলবুল আহমেদ
শেখ বুলবুল আহমেদ বিভাগীয় প্রধান
সুমাইয়া ফেরদৌসি
সুমাইয়া ফেরদৌসি জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর
মোঃ হাবিবুর রহমান
মোঃ হাবিবুর রহমান জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর